ট্যাবু ভাঙার নামে কিশোর-কিশোরীদের একত্রে বসিয়ে ঋতুস্রাবের গল্প বলতে উদ্বুদ্ধ করছে আমাদের পাঠ্যবই। আবার উপদেশ দেওয়া হচ্ছে, ঋতুস্রাবের প্যাড কেনার প্রয়োজন হলে মাকে নয়, বাবা অথবা বড় ভাইকে বলো। শুধু তাই নয়, কোনো কোনো বিশেষ স্কুলে উদযাপন করে ছাত্র-ছাত্রীর হাতে একত্রে তুলে দেওয়া হচ্ছে প্যাড।
সৃষ্টির সূচনাকাল থেকেই ঋতুস্রাবের ট্যাবু ছিল। তাতে পৃথিবীর বিশেষ কোনো ক্ষতি হয়েছে বলে আমাদের জানা নেই। আর সব ট্যাবুই ক্ষতিকর নয়। আমাদের জীবনে এমন অনেক কিছু আছে, যেগুলোতে আমরা আড়াল রাখি। ভরা মজলিশে আমরা স্বশব্দে বায়ু ত্যাগ করি না। এটা আমাদের শালীনতা, সুরুচিবোধ। ঋতুস্রাবের বিষয়টিও অমন।
বর্তমান পৃথিবীতে যারা ঋতুস্রাবের কথিত ট্যাবু ভেঙেছে বা ভাঙতে পারেনি, তাদের কতটুকু লাভ বা ক্ষতি হয়েছে? মূলত জাগতিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে ঋতুস্রাবের ট্যাবু ভাঙা না-ভাঙার সরাসরি কোনো সম্পর্কই নেই।
আমাদের মেয়েরা ঋতুস্রাব বিষয়ে সচেতন হোক, আমরাও চাই। কিন্তু এর সঙ্গে উঠতি বয়সী কিশোরদের জড়ানো কেন! এর মাধ্যমে যে আমাদের চিরায়ত শালীনতাবোধের শেকড় কাটা হচ্ছে, সচেতন মানুষ মাত্রই তা বুঝতে পারেন।
এরই ধারাবাহিকতায় আমরা দেখতে পাই, নবম শ্রেণীর জীবন ও জীবিকা বইতে স্থান পেয়েছে অশ্লীলতায় ভরপুর নারী সাজা পুরুষদের অন্তর্বাসের ওয়েবসাইটের কিউআর কোড, যা শরীফার গল্পের থিমের সাথে মিলে যায়।
এছাড়াও আমরা গভীর উদ্বেগের সাথে লক্ষ করছি, স্বাস্থ্য সুরক্ষা বইগুলোর মাধ্যমে কোমলমতি শিশুদেরকে অবাধ মেলামেশার উস্কানি দেয়া হচ্ছে, পরিবার-ব্যবস্থাকে উপস্থাপন করা হচ্ছে নেতিবাচকভাবে।
শালীনতাবোধ আমাদের ঐতিহ্য, আমাদের গর্ব। আমাদের পরিবারিক বন্ধন এখনো যে পৃথিবীর বুকে উজ্জ্বল হয়ে টিকে আছে, এর মূলে রয়েছে শালীনতার চর্চা। এই শালীনতা ধ্বংস হলে এদেশের হৃৎপিণ্ডে যে গভীর ক্ষত তৈরি হবে, সেই ক্ষত সারাবার কোনো ওষুধ পাওয়া যাবে না।
কৃতজ্ঞতা- জনাব আহমাদুল্লাহ।

image